ফেসবুক এখন সবারই বন্ধু, আত্মীয় আরো অনেক কিছূ। আমরা যা বন্ধুকে বলতে পারি না, ফেসবুকে দিব্যি তা বলে ফেলি। যাকে বলতে চাই আকারে ইঙ্গিতে তাকে বুঝিয়ে দেই ইত্যাদি ইত্যাদি। এমন একটা অবস্থা হয়েছে, যা কিছু করি তা এখানে শেয়ার না করলে আমাদের অনেকে পেটের ভাত হজম হয় না। বাপ-দাদা চোদ্দগুষ্ঠির বন্ধু ফেসবুক। তবে বাস্তব জীবনের মত এখানেও ফাঁদ পাতা আছে। সাবধান না হলে, পা পিছলে আলুর দম। কয়েক বছর আগে এমনি এক ফাঁদে প্রায় পা দিয়ে ১২০০০ টাকা দন্ডি দিতে বসেছিলাম। শেষ মুহূর্তের চিন্তায় বেঁচে গিয়েছি। আজকেও এমনই একজনের দেখা পেলাম।
গত কয়েকদিন ধরে মনটা বিক্ষিপ্ত। গতকাল থেকে আরো বেশী। নানা চিন্তায় অফিসের কাজে মন বসছিল না। এমন সময় আমার লিখা কবিতার সুত্র ধরে একজন আলাপ জমানোর চেষ্টা করলো মেসেঞ্জারে। আমাদের মত ক্ষুদ্র কবিগণ হয়ত কবিতার প্রশাংসা শুনতে ভাল বাসেন। তাই কিছুটা আলাপচারিতায় মেতে গেলাম। তিনিও কবিতা লেখেন। তার ফেসবুক পেজে কবিতা আর কবিতার প্রশাংসা পত্রে ভরা। কিছুটা খটকা লাগলো। কথায় কথায় জানলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। কবিতা নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছিল।
হঠাৎ তিনি আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে আমার কাপড়ে হাত দিলেন। মানে, জিজ্ঞাসা করলেন আমি কি পোশাক পড়ে অফিসে এসেছি। এটা যে একটা ফাঁদ বুঝতে বাকি রইল না। আমিও ফাঁদ পেতে ধরার চেষ্টা করলাম। সরাসরি জিজ্ঞাসা করলাম, জীবনানন্দের কোন কবিতা তার সবচেয়ে বেশী ভাল লেগেছে। ব্যাস আলাপ বন্ধ। ফাঁদটা পরিস্কার হয়ে গেল। সূত্র বলছে, রবীন্দ্রনাথ ১৮৮৮ সালে প্রায় ১৩৫ বছর আগে এরকম ফাঁদের কথা বলে গেছেন-
প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে,. কে কোথা ধরা পড়ে, কে জানে–.
গরব সব হায় কখন টুটে যায়, সলিল বহে যায় নয়নে।