সম্প্রতিকালে দু’টো ইংরেজী শব্দ বাজারে বেশ প্রচলিত। একটা হচ্ছে ব্রেকআপ, অন্যটা স্যাংশন। প্রথম শব্দটা প্রেম ভালবাসার জগতে বিচরণ করছে, আর স্যাংশন রাজনীতির জগতে। এই শব্দ দু’টোর অর্থ নিয়ে আলোচনা করার কিছুই নেই। সবাই অর্থটা জানে। আমার চিন্তা অন্য। এই দু’টো শব্দ যদি একই ব্যক্তির জীবনে একসাথে বিচরণ করে, তার কি অবস্থা হয়েছে, বা হবে!
‘স্যাংশন’ শব্দটি আমাদের রাজনীতির টেবিলে নতুন চা’য়ের কাপ। এই চা কেউ পান করতে চাচ্ছে না। একে অন্যের সাথে ঠেলাঠেলি করছে। তাদের কথাগুলো অদ্ভুত! কেউ স্বীকার করছে না যে তাদের ভুলের ফলাফল এ’টা। অনেকে আবার ‘যামু না তোর পাড়ায় বেড়াতে’ বেশ আত্মপ্রসাদের হাসি দিচ্ছে। দেশের কপালে যে কালি লাগলো সেটা নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই।
আমি অবশ্য দেশের স্যাংশন নিয়ে আলোচনায় আসিনি। তবে বাঙ্গালী তো, রাজনীতি বুঝি আর না বুঝি, দু’টো কথা বলতে তো ট্যাক্স লাগবে না। তাই এটা দিয়েই শুরু করেছি। ব্যক্তির দ্বারা স্যাংশন কোন ব্যক্তিজীবনকে প্রভাবিত করে, সে’টাই অবতারণা করার চেষ্টা করছি।
আগুন ঝাপা মেজাজ ভেসে এল ফোনের স্পীকারে। ফোন কোম্পানী বুঝেশুনে হয়ত আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি ততক্ষণে এন্টার্টিকার হাজার বছরের বরফ। অপেক্ষায় আছি লেলিহান শিখা কখন থেমে যাবে। দমকল বাহিনীকে (পক্ষের যুক্তি) ডাকার ইচ্ছে করেনি । ‘যে আগুন জ্বলছে’ (কোন ছবির নাম হতে পারে) তাকে জ্বলতেই দেয়া উচিৎ। ভেবেছিলাম তীব্র তাপদাহ শেষে অন্তত একটু হলেও আশার বাণী শুনবো। সে আশায় গুড়েবালি।
‘কয়েকদিন আর ফোন করবেন না’- স্যাংশন জারি হয়ে গেল। আমি এই স্যাংশনযুক্ত জীবন নিয়ে কি করবো। ‘আমি কার কাছে গিয়া জিগামু সে দুঃখ দ্যায় ক্যান, ক্যান এত তপ্ত কথা কয়- ভাবতে ভাবতে ফোন বন্ধ হয়ে যায়। আধুনিক ফোনে ফোন রাখার শব্দ ভেসে আসে না। যদি আগের দিনের ফোন হত, তাহলে ক্রাডলে রিসিভার আছড়ে পড়ার শব্দ নিশ্চয়ই ভেসে আসতো। তবে অন্তরে সেই শব্দের প্রতিধ্বনি এখনও বেজে চলছে।
স্যাংশনের এই ঘটনায় কাকতালীয় একটা বিষয় সামনে এসেছে। এর আগেও ৪২ দিনের একটা স্যাংশন আমার কপালে জুটেছিল। তখন বাংলাদেশে স্যাংশন পায় নি। কিন্তু এই আমার এই দু’টো স্যাংশন একই রকম ঘটনার পরে এসেছে। প্রথম যে বার স্যাংশন জারি হলো, তার আগেরদিন কইমাছ কিনেছিলাম। সেই কইমাছের কাঁটা ৪২দিন ধরেই গলায় বেঁধেছিল। এবারও মাছ কেনার পরেরদিন স্যাংশন জারি হয়েছে। এবার তো অনেক ধরণের মাছ……., কতদিনের যে স্যাংশন………., ‘পুন্নিমার চান হয় অমাবস্যা কিভাবে আবার?’